,

কোটালীপাড়ায় নিজেদের অর্ধশতাধিক বাড়ি লকডাউন করল গ্রামবাসী

কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি: বাড়ির আসা-যাওয়া পথের সামনে বাঁশের ব্যারিকেড দেয়া। তাতে একটি সাইনবোর্ড ও একটি লাল পতাকা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে।

সাইনবোর্ডটিতে লেখা রয়েছে, বাড়ি লকডাউন, দয়া করে কেউ আসা-যাওয়া করবেন না। সৌজন্যে ভিপি লিটন শেখ। আর এমনই বাঁশের ব্যারিকেড ও সাইনবোর্ড রয়েছে অর্ধশতাধিক বাড়িতে।

প্রশাসন এখনও গোপালগঞ্জ লকডাউন না করলেও কোটালীপাড়া উপজেলার তাড়াশী গ্রামে করোনাভাইরাস আতঙ্কে নিজেদের উদ্যোগেই নিজেদের অর্ধশতাধিক বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।

জানা গেছে, করোনাভাইরাস রোধে গোপালগঞ্জের বিভিন্ন হাট-বাজার. মার্কেট ও দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সচেতনতা সৃষ্টি করতে নানাভাবে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে প্রশাসন। এতে সেনাবাহিনীও সহযোগিতা করছে।

করোনাভাইরাস নিয়ে অধিকাংশ জনগণের মধ্যে তেমন একটা আতঙ্ক দেখা যায়নি। ফলে বিভিন্ন স্থানে অবাধে ঘোরাফেরা করছে সাধারণ মানুষ। তারপরও জেলা বা উপজেলা প্রশাসন লকডাউন ঘোষণা করেনি।

তাই করোনা রোধে নিজেদের উদ্যোগে কোটালীপাড়া উপজেলার তাড়াশী গ্রামের তিনটি পয়েন্টে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে অর্ধশতাধিক বাড়ি নিজেরাই লকডাউন করে দিয়েছে।

যুবলীগ নেতা কোটালীপাড়া শেখ লুৎফর রহমান ডিগ্রি কলেজের সাবেক ভিপি লিটন শেখের নেতৃত্বে এ সব বাড়ি লকডাউন করা হয়। নিজ উদ্যোগে বাড়ি লকডাউন করায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই নিজ উদ্যোগে বাড়ি বা এলাকা লকডাউন করার কথা ভাবছেন।

লকডাউন হওয়া পরিবারের সদস্য ইস্রাফিল শেখ বলেন, আমি ও আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আতঙ্কে রয়েছি। সবখানেই অবাধে ঘোরাফেরা চলছে। যে কারো মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে। সে জন্য আমার বাড়ি আমি নিজে লকডাউন করে দিয়েছি।

একই গ্রামের সাগর শেখ বলেন, বাড়িতে পরিবারের সদস্য রয়েছে। যেভাবে করোনা ছড়াচ্ছে এতে আমরা আতঙ্কিত। যে কারণে লিটন শেখের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে আমার বাড়ি লকডাউন করেছি।

জামাল শেখ ও ওহাব শেখ বলেন, যেভাবে গ্রামের লোকজন বাইরে ঘোরাফেরা করছে তাতে প্রশাসনের উচিত ছিল লকডাউন ঘোষণা করা। কিন্তু প্রশাসন তা না করায় নিজ উদ্যোগে আমার বাড়ি লকডাউন করেছি। নিজ পরিবারের সদস্যসহ আমার বাড়িতে সবাইকে আসা-যাওয়ার জন্য নিষেধ করেছি।

এ ব্যাপারে যুবলীগ নেতা কোটালীপাড়া শেখ লুৎফর রহমান ডিগ্রি কলেজের সাবেক ভিপি লিটন শেখ বলেন, করোনাভাইরাসে আমরা সবাই আতঙ্কিত হলেও সাধারণ মানুষের মাঝে কোনো প্রভাব পড়েনি। এতে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পরার আশঙ্কা করছি। যে কারণে আমাদের এলাকার তিনটি পয়েন্টে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে লাল পতাকা ও সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে দিয়ে অর্ধশতাধিক বাড়ি লকডাউন করে দিয়েছি। সেই সঙ্গে সবাইকে আসা-যাওয়ার জন্য নিষেধ করেছি।

কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মাহফুজুর রহমান বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে এখনও কোনো এলাকা লকডাউন করার পরিকল্পনা নেই। তবে তারা এটা নিজেদের উদ্যোগে করেছেন। এ বিষয়টি আমাদের এখনও তারা জানায়নি। মানুষ যাতে ঘরে থাকে সে বিষয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি আমরা। বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করে সচেতন করা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর